জগতের অবসান

জগতের অবসান

সারসংক্ষেপ

আমাদের বিশ্বের ভবিষ্যত কোনো গুপ্তরহস্য নয়। এটি প্রভু যীশু খ্রীষ্টের বই বাইবেলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। যীশু আমাদের সুনির্দিষ্ট চিহ্নাবলির জন্য জেগে থাকতে বলেছেন যাতে আমরা জানতে পারি কখন শেষ ঘনিয়ে আসে। আমরা যদি তাঁর শিক্ষামালা অনুসরণ করি এবং তাঁর উপর আমাদের আস্থা রাখি, তাহলে ভবিষ্যতের বিষয়ে আমাদের নিশ্চয়তা থাকবে। এই পুস্তিকাটি আমাদের বলে যে কীভাবে জগতের অবসান এবং অনন্তকালের শুরুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

প্রকাশনার ধরণ

পুস্তিকা

প্রকাশকগণ

Sharing Hope Publication

যে ভাষায় পাওয়া যাবে:

8 ভাষাগুলো

পৃষ্ঠাগুলো

6

ডাউনলোড করুন

রমনদীপ তার বয়সের ভারে নুয়ে পড়া শরীর নিয়ে সরে আর একটু বেশি আরামদায়ক অবস্থান খুঁজছিলেন। আজকাল তার গাঁটের ব্যথা বেড়ে গিয়েছে, আর তিনি যখন ধানের ক্ষেতের দিকে তাকালেন, সব রঙগুলি মিশে ঝাপসা দেখাচ্ছিল। তিনি তার পুত্রবধূর খাবার তৈরি করার শব্দ শুনতে পাচ্ছিলেন, এবং ভাবছিলেন যে তার পরিবার তাকে বোঝা হিসাবে মনে করছে কিনা। বার্ধক্যে যাওয়াটা সহজ ছিল না—না তার নিজের জন্য, না যারা তার যত্ন নিচ্ছিল, তাদের জন্য।

তিনি যখন ছোট ছিলেন এবং মন্দিরে হেঁটে যেতে পারতেন সেই সময়ে তার গুরুকে যা বলতে শুনতেন তা ভাবতে লাগলেন। তার গুরু বলেছিলেন যে চারটি বিশ্বযুগ রয়েছে—যার প্রত্যেকটি ক্রমশ মন্দের দিকে যাচ্ছে। সর্বশেষ যুগটি হল—কলি যুগ—যেটি সবচেয়ে মন্দ হবে, দুষ্কর্ম, দুঃখ, এবং অন্ধকারে পরিপূর্ণ। রমনদীপ দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। কি জানি হয়ত কলি যুগটি কিছুটা বার্ধক্যের মতো—একদা যা কিছু ভাল ছিল তার একটি চূড়ান্ত অবক্ষয়ের সময়। তিনি খবরে ভূমিকম্প, রোগ-ব্যাধি, খুন, এবং যুদ্ধ-বিগ্রহে কীভাবে মানুষ মরছে সে সব শুনতেন। জীবিতরা বস্তুবাদী, হতাশাগ্রস্ত, এবং অনৈতিক হয়ে উঠছে।

কবে এই দুঃখময় পৃথিবীর অবসান হবে? তার এই পুরানো দেহখানি—এবং এই অবক্ষয়রত গ্রহটি—কি পুনর্জন্মলাভ করবে?

পৃথিবীর ভবিষ্যতের পূর্বাভাস

আমি আপনাকে একজন ঐশ্বরিক ভবিষ্যদ্বক্তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই, যাঁর দেয়া ভবিষ্যতের লক্ষণগুলো আমি নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করি। তিনি হলেন প্রভু যীশু খ্রীষ্ট। তিনি পৃথিবীতে একজন মানুষরূপে এসেছিলেন, মানুষকে রোগ হতে আরোগ্য করেছিলেন এবং সকলকে জানিয়েছিলেন কীভাবে তারা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারে। তাঁর ৩৩ বছর বয়সে, তিনি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তারপর, আশ্চর্যজনকভাবে, তিনি মৃত্যু থেকে আবার পুনরুত্থিত হলেন! তিনি বলেছিলেন যে আমরা যদি তাঁর উপর আস্থা রাখি এবং তাঁর অনুগত থাকি, তবে তাঁর আত্মত্যাগ আমাদের জন্য ক্ষমা এবং মুক্তি নিয়ে আসবে।

প্রভু যীশু আমাদের বিশ্বের ভবিষ্যত সম্পর্কে বলেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন যে তিনি বর্তমানের এই মন্দ যুগের অবসান ঘটাবেন। তার বই, অর্থাৎ বাইবেল, ভবিষ্যদ্বাণীতে পরিপূর্ণ একটি বই। আমাদের অবশ্যই তাঁর ভবিষ্যদ্বাণীর প্রতি এবং কীভাবে আমরা জানতে পারব যে পরিসমাপ্তি ঘনিয়ে এসেছে সে দিকে মনোযোগ দিতে হবে।

জগতের অবসান

একদিন, প্রভু যীশুর শিক্ষার্থীগণ তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো, “আপনার আগমনের এবং যুগের অবসানের লক্ষণ কী হবে?” (বাইবেল, মথি ২৪:৩)। প্রভু যীশু তাদের বলেছিলেন যে, যুগের অবসান হবার আগে এমন সব লক্ষণ দেখা যাবে যা আমাদের জানতে সাহায্য করবে যে তাঁর আগমন শীঘ্র হবে। এই সমস্ত লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

মিথ্যা পরিত্রাতাগণ। প্রভু যীশু বলেছেন, “দেখিও, কেহ যেন তোমাদিগকে না প্রতারিত করে। কেননা অনেকে আমার নাম ধরিয়া আসিবে, বলিবে, ‘আমিই সেই খ্রীষ্ট,’ আর অনেক লোককে ভুলাইবে” (মথি ২৪:৪, ৫)। আমরা যেন অবশ্যই প্রভু যীশু বলে দাবি করা প্রতারকদের দ্বারা প্রতারিত না হই। তাঁর সত্যিকার আগমন সারা বিশ্ব দেখতে পাবে—“বিদ্যুৎ যেমন পূর্বদিক হইতে নির্গত হইয়া পশ্চিমদিক পর্যন্ত প্রকাশ পায়” (মথি ২৪:২৭)—এবং এটা সমগ্র বিশ্ব ভয়ানক এবং আশ্চর্যজনক মহামারি দ্বারা প্রকম্পিত হওয়ার পরে ঘটবে ৷

যুদ্ধ ও যুদ্ধের গুজব। প্রভু যীশু বলেছেন, “আর তোমরা যুদ্ধ ও যুদ্ধের গুজব শুনিবে। কিন্তু দেখিও, ব্যাকুল হইও না; কেননা এই সকল ঘটনা অবশ্যই ঘটিবে, কিন্তু তখনও শেষ নয়। এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে লড়াই করিবে, আর এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে যাইবে” (মথি ২৪:৬, ৭)। আমরা যুগের শেষের দিকে পৌঁছাতেই, যুদ্ধগুলি আরও ঘন ঘন এবং আরও গুরুতর হয়ে উঠবে।

দুর্ভিক্ষ, ভূমিকম্প এবং মহামারী। তৃতীয় যে লক্ষণের তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তা হল “বিভিন্ন স্থানে দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হইবে। কিন্তু এই সকলই যাতনার আরম্ভ মাত্র” (মথি ২৪:৭, ৮)। শতাব্দীর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ২ কোটিরও বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হয়েছে। নেপালে ২০১৫ সালের ভূমিকম্প ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে একটি, যাতে ৮,০০০ মানুষ মারা যায়। রোগ অসংখ্য প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। সত্যিই, প্রভু যীশু যা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তা এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি। 

নৈতিক অবক্ষয়। প্রভু যীশু বলেছেন, ‍“আর অধর্মের বৃদ্ধি হওয়াতে অধিকাংশ লোকেদের মধ্যে প্রেম শীতল হইয়া যাইবে” (মথি ২৪:১২)। হিসাব বলে যে ভারতে প্রতিদিন গড়ে ৯১টি ধর্ষণ এবং ৭৯টি হত্যাকাণ্ড হয়। লোকেরা এতটাই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে যে তাদের আচরণ কীভাবে অন্যদের ক্ষতি করে তা নিয়ে তারা আর চিন্তা করে না।

প্রভু যীশু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে এই সমস্ত লক্ষণগুলি মেঘযোগে তাঁর গৌরবময় প্রত্যাবর্তনের পূর্বেই ঘটবে। যখন আমরা এই লক্ষণগুলি ঘটতে দেখি, আমরা জানতে পারি যে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণীগুলি সত্য এবং তাঁর আগমন খুব কাছাকাছি!

প্রভু যীশুর প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রস্তুতি।

যারা স্বার্থপরতা, অহংকার, এবং অনৈতিকতায় বসবাস করছে তারা প্রভু যীশুর আগমনে খুশি হবে না। প্রকৃতপক্ষে, যখন তিনি মেঘযোগে ফিরে আসবেন, তখন তাদের সমস্ত মন্দ কাজগুলো এক ধ্বংসাত্মক মুহূর্তে তাদের উপর পতিত হবে। তারা তাঁর কাছ থেকে লুকানোর পথ খুঁজবে এবং পাথর ও পাহাড়ের কাছে চিৎকার করে বলবে, “আমাদের উপরে পতিত হও, যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, তাঁহার সম্মুখ হইতে আমাদিগকে লুকাইয়া রাখ!” (বাইবেল, প্রকাশিত বাক্য ৬:১৬)। 

কিন্তু যারা প্রভু যীশুর উৎসর্গের প্রতি আস্থা রাখে, তারা সেই দিন তাৎক্ষণিকভাবে পরিবর্তিত হবে এবং নতুন ও অমর দেহ লাভ করবে। তারা মেঘে ভাসবে এবং চিরতরে এই অধঃপতিত পৃথিবী থেকে মুক্তি পাবে। আপনি যদি সেই চির সুখী ব্যক্তিদের একজন হতে চান, তবে আজ আপনি এই সহজ-সরল প্রার্থনাটি করতে পারেন:

প্রিয় সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর, আমি বিশ্বাস করি প্রভু যীশু শীঘ্রই ফিরে আসছেন। দয়া করে আমাকে শেখান কীভাবে আমি প্রভু যীশুকে জানব এবং বিশ্বাস করব যেন আমি স্বর্গে নীত হওয়া ব্যক্তিদের দলে থাকতে পারি। আমেন।

আপনি যদি প্রভু যীশুর ভবিষ্যত-বিষয়ক ভাববাণী সম্পর্কে আরও জানতে চান, তাহলে এই কাগজের পিছনে দেওয়া তথ্য অনুসারে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

Copyright © 2023 by Sharing Hope Publications. এখানে অন্তর্ভুক্ত কাজ অনুমতি ছাড়াই অ-বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে মুদ্রণ এবং বণ্টন করা যেতে পারে।
শাস্ত্রের কথাগুলো নেয়া হয়েছে পবিত্র বাইবেল (কেরী ভার্সন) (ROVU) থেকে।

আমাদের সংবাদপত্র পাবার জন্য নিবন্ধন করুন

নতুন প্রকাশনাগুলো বের হলে সবার আগে জানুন!

newsletter-cover